• Latest News

    টাকার খনি ঈদগাঁও ইউনিয়ন ভূমি অফিস!


    ঈদগাঁও সংবাদদাতা :
    ভূমি প্রশাসনে সামান্য এমএলএসএস (পিয়ন)’র চাকরি করে বিপুল সম্পদসহ বাড়ি-গাড়ী ও অবারিত বিত্ত-বৈভবের মালিক বনে গেছে এক ব্যক্তি। ৪র্থ শ্রেণীর সামান্য এক পিয়নের কোটিপতি বনে যাওয়ার কারন অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে অবাধ দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর ও পিলে চমকানো তথ্য ।
    সূত্রে প্রকাশ, কক্সবাজার সদরের জালালাবাদ ইউনিয়নের খামার পাড়া গ্রামের ইতিপুর্বের হত-দরিদ্র ছৈয়দ নুর ১৯৮০ সালে অবৈতনিক ও অবৈধ উমেদার হিসাবে কাজ শুরু করেন ঈদগাঁও ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যাওয়া আসা শুরু করেন। অনেক কলাকৌশল অবলম্বন করে ১৯৮৫ সালে পিয়ন পদে সরকারীভাবে উক্ত অফিসে নিয়োগ পান তিনি। এর পর পরই শুরু হয় বৈধ-অবৈধ পন্থায় উর্পাজনের পালা। এলাকাবাসী জানান, পিয়ন পদে চাকরী পাওয়ার পরে জমি নামজারী করে দেয়া, খসড়া-সহিমুরি খতিয়ান তুলে দেয়া, জমা খারিজ ও জমা একত্রীকরন, খাজনা ও দাখিলার রশিদ করে দেয়া সহ জমি-জমা সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ করে দেয়ার কন্ট্রাক্ট নিয়ে শুরু করেন পাইকারী ধান্দাবাজি। ভূমি সংক্রান্ত নানা কাজের বাহানায় বিভিন্নজন থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। নামে-বেনামে সরকারী বিভিন্ন খাস জমি বন্দোবস্ত নিয়েছেন তিনি। স্হানীয় মুসল্লীরা জানান, ২০১১ সালে খামারপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পুকুরের পুর্বপার্শ্বে ঈদগাঁও-ফরাজী পাড়া সড়কের পাশ্বর্স্থ খাস জমি বন্দোবস্তিকরে নেন একই এলাকার জনৈক নুরুল হকের নামে। বিরোধপুর্ণ বিভিন্ন জমি নামমাত্র মূল্যে কিনে নিয়ে গোঁজামিলের মাধ্যমে কাগজপত্র ঠিকঠাক করে চড়া মূল্যে বিক্রি করে বিপুল সম্পদ গেছেন তিনি। সামান্য পিয়নের চাকরী করলেও এভাবে লাগামহীন দুর্নীতির মাধ্যমে গড়ে তুলেন বিপুল সম্পদ। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, জালালাবাদ খামার পাড়ায় পৈত্রিক বসতভিটায় সুউচ্চ বাউন্ডারী ওয়াল ঘেরা এবং কলাপসিবল গেইট দিয়ে আলীশান বিশাল দোতলা পাকা বাড়ী করেছেন পিয়ন ছৈয়দ নূর। বাড়ীর ছাদে শোভা পাচ্ছে বিশাল ডিশ এ্যান্টেনা। বিপুল টাকা ব্যয়ে গেইট থেকে বাড়ী পর্যন্ত ব্রিক সলিং রাস্তা, পুকুরঘাটে দৃষ্টিনন্দন মজলিসখানাসহ সব কিছুই করেছেন তিনি। সামান্য পিয়ন হয়েও দূর্নীতির টাকায় বিপুল স্হাবর সম্পদ গড়েছেন ছৈয়দ নূর। এর মধ্যে খামারপাড়া কেন্দ্রিয় জামে মসজিদের পুকুরের পুর্বপার্শ্বে সংলগ্নস্থানে প্রথম স্ত্রীর নামে জমি, কক্সবাজার সরকারী কলেজের অদুরে ২য় স্ত্রীর নামে প্লট, পৌরসভার ঝাউতলা প্রধান সড়কে ৩য় স্ত্রীর ছেলের নামে ছালেহ নুর গেষ্ট হাউস ও ঝাউতলা গাড়ীর মাঠে নিজের নামে জমি নিয়ে বিশাল বাড়ী উল্লেখযোগ্য।
    স্হানীয়রা জানান, তার প্রথম পক্ষের ছেলে ছালেহ নুর ২০০৪ সালে সৌদী আরব (ওমরা ভিসায়) গিয়ে কোন সুবিধা করতে পারেনি, পরে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার করে সৌদী আরবের মক্কা নগরীতে বিশাল কাপড়ের দোকান খুলে দিয়েছেন ছেলেকে। ঈদগাঁও বাজারের শফি সুপার মার্কেটে রেডিমেড কাপড়ের বিশাল পাইকারী দোকান খুলেছেন পিয়ন ছৈয়দ নূর। “কাদেরী জেন্টস কালেকশন এন্ড গার্মেন্টস” নামের উক্ত দোকান পরিচালনা করেন প্রথম স্ত্রীর মেজ ছেলে ওমর ফারুক লুতু। তার তিনপুত্র এফ জেড, আপাচি ও পালসার মডলের তিনটি নাম্বার বিহিন দামী মোটর সাইকেল ব্যাবহার করেন। তিন স্ত্রী ও তাদের সন্তানদের নামে আলাদা আলাদা বীমা, ডিপিএস ও ব্যাংক ব্যালেন্স রয়েছে। এসব ছাড়াও কক্সবাজার রামু, চকরিয়া ও বন্দর নগরী চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে জমি কিনে বাড়ী করেছেন তিনি। চাকরিস্থলে ইতি পুর্বে তার লাগামহীন দুর্নীতি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এলে কয়েকবার শাস্তিমুলক বদলি করা হয় তাকে। এর অংশ হিসেবে রামু, মরিচ্যা, উখিয়া ও কুতুবদিয়ার বিভিন্ন ভূমি অফিসে চাকরি করেছেন তিনি। কিন্তু চেষ্টা-তদবীর করে সুবিধা জনক পোষ্টিং ও টাকার খনি হিসেবে পরিচিত ঈদগাঁও ইউনিয়ন ভূমি অফিসেই বারবার ফিরে এসেছেন পিয়ন ছৈয়দ নূর। কিন্তু উক্ত অফিসের পিয়ন হলেও সময়-সুযোগ বুঝে বিভিন্ন জনের কাছে নিজেকে তহসিলদার ও ক্ষেত্রবিশেষে আরও উপরস্থ কর্মকর্তা বলে জাহির করেন তিনি। বিগত সময়ে অত্র অফিসের তহসিলদার/ সহকারী তহশিলদার সহ বিভিন্ন কর্মকর্তা বদলী হলেও বিভিন্ন কলাকৌশলে বহাল তবিয়তে রয়ে গেছেন পিয়ন ছৈয়দনুর। আর জনগুরুত্বপূর্ণ ঈদগাঁও ইউনিয়ন ভুমি অফিসকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত করে কামিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। এভাবে তার হাতে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন করদাতা প্রান্তিক জনগণ। কিন্তু উপরোক্ত রকমারী অভিযোগের ব্যাপারে ভিন্নমত পোষন করে পিয়ন ছৈয়দনুর বলেন, এসব অভিযোগ কেউ প্রমান করতে পারবেনা আমাকে ফাসানো হচ্ছে।
    nbs

    • Blogger Comments
    • Facebook Comments
    Item Reviewed: টাকার খনি ঈদগাঁও ইউনিয়ন ভূমি অফিস! Rating: 5 Reviewed By: Unknown
    উপরে যান