• Latest News

    নিবন্ধনে হঠাৎ বেঁকে বসেছে রোহিঙ্গারা, সক্রিয় নেতিবাচক প্ররোচনা চক্র


    নিজস্ব প্রতিবেদক:
    মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা সরকার ঘোষিত বায়োমেট্রিক নিবন্ধনে আগ্রহী নয়। এর পরিবর্তে তারা ত্রাণের স্লিপ, ত্রিপল, কম্বল, পলিথিন ও ঘর বাঁধার স্থান নির্ধারণেরই বেশি ব্যস্ত। তবে দু’টি কারণে তারা বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের অনিহা দেখাচ্ছেন। এক হলো রাষ্ট্রের চেয়ে জাতিগত স্বীকৃতি ও অন্যটি মিয়ানমারের একটি চক্রের নেতিবাচক প্ররোচনা।
    দেখা গেছে, রোহিঙ্গাদেরই একটি চক্র ক্যাম্পে ক্যাম্পে ঘুরে বর্তমান পদ্ধতিতে নাম নিবন্ধন না করার জন্য নির্দেশ দিচ্ছে, প্রচারণা চালাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে বসবাসকারী পুরাতন রোহিঙ্গারাই এতে বেশি ভূমিকা রাখছে বলেও অভিযোগ মিলেছে। সরকারের তরফ থেকে প্রতিটি ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের নিবন্ধনের জন্য অনুরোধ জানিয়েও আশাতীত ফল পাওয়া যাচ্ছে না। নারী-পুরুষ সব রোহিঙ্গা রাষ্ট্রের পরিবর্তে তাদের জাতিসত্তা ও ধর্মকেই বড় করে দেখছে, বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এ কারণেই রোহিঙ্গাদের নাম নিবন্ধনে আশাতীত ফল পাওয়া যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবার (০৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র ৬৭ হাজার রোহিঙ্গা নাম নিবন্ধন করেছে।
    ত্রাণ মন্ত্রণালয় ও কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালংয়ের নিবন্ধন ক্যাম্প সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত ৬৭ হাজার রোহিঙ্গার নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ৪ অক্টোরব পর্যন্ত ৬১ হাজার রোহিঙ্গা তাদের নিবন্ধন করেছে। বাকীরা বৃহস্পতিবার নিবন্ধন করে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে সব রোহিঙ্গার নাম নিবন্ধন শেষ হবে। আরো যদি রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসে তবে তাদেরও নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে।
    নিবন্ধনের সময় ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহে নাগরিকত্বের ঘরে ‘মিয়ানমার’ লেখা নিয়ে আপত্তি রোহিঙ্গাদের। প্রথমে এতে তাদের ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও শুরুর এক সপ্তাহের মধ্যেই তারা হঠাৎ করে বেঁকে বসে। নিবন্ধনে অনাগ্রহ দেখায়। নাগরিকত্বের ঘরে ‘রোহিঙ্গা মুসলিম’ লেখার দাবি তোলে। এরপরই বায়োমেট্রিক নিবন্ধনে ভাটা পড়ে। তারা নিবন্ধন ক্যাম্পে আসা বন্ধ করে দেয়। এসময় অল্প সংখ্যক রোহিঙ্গার নাম নিবন্ধন সম্পন্ন হয়।
    অনেকের সঙ্গেই কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করা পুরাতন রোহিঙ্গাদের পরামর্শেই নতুন রোহিঙ্গারা নিবন্ধন থেকে পিছিয়ে এসেছে। বিশেষ করে নতুন এবং পুরাতনদের মধ্যে যারা রাখাইন রাজ্যে অবস্থানকালে বিভিন্ন সময়ে জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তারাই বিষয়টিকে জটিল করে তুলেছেন। এ ক্ষেত্রে তাদের নেতিবাচক ভূমিকাই দায়ী।
    কুতুপালং ক্যাম্পের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম এর ভলান্টিয়ার লুতফুন্নাহার শেফা জানান, নাম নিবন্ধনে রোহিঙ্গাদের আগ্রহ কম। নাম নিবন্ধনের চেয়ে তারা থাকার জন্য জায়গা ও ত্রাণের জন্য বেশি আগ্রহী। কোথায় কখন ত্রাণ দেয়া হবে তা নিয়েই তারা একে অপরের সঙ্গে বেশিরভাগ সময় কথা বলে। অনেক রোহিঙ্গাকে নাম নিবন্ধন করতে আসার পরেও আবার ত্রাণের জন্য চলে যেতে দেখা গেছে। নিবন্ধনের জন্য অনেক সময় ধরে লাইনে বসে অপেক্ষা করতে হয়। এ কারণেও তারা নাম নিবন্ধন করতে আসছে না।
    তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নিবন্ধনের জন্য নতুন কৌশল নেয়া হয়েছে। প্রতিটি ক্যাম্পই ব্লক চিহ্নিত করে মাঝিদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মাঝিদের কাছে নিবন্ধন ফরম দেওয়া হয়েছে। nb

    • Blogger Comments
    • Facebook Comments
    Item Reviewed: নিবন্ধনে হঠাৎ বেঁকে বসেছে রোহিঙ্গারা, সক্রিয় নেতিবাচক প্ররোচনা চক্র Rating: 5 Reviewed By: Unknown
    উপরে যান